পৃথিবীর ৪০০ কোটি মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর যে কারও ফোনালাপে এখন আড়ি পাতা যাবে! মোবাইল ফোনে কথা বলার গোপনীয়তা রক্ষার্থে যে এনক্রিপশন বা গোপন সংকেত ব্যবহার করা হয়, সম্প্রতি তার বিস্তারিত উন্মোচন করেছেন বলে ঘোষণা দেন একজন জার্মান কম্পিউটার বিজ্ঞানী। গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশনস (জিএসএম) প্রযুক্তিতে মোবাইল ফোনের তথ্য আদান-প্রদানের গোপনীয়তা রক্ষায় এ৫/১ নামের এনক্রিপশন কোড পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় বিশ্বব্যাপী। এই সংকেত ভাঙতে পাঁচ মাস ধরে একদল গবেষক নিয়ে কাজ করছেন বিজ্ঞানী কারস্টেন নল। বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি হলো জিএসএম। বিজ্ঞানী নলের কথা যদি ঠিক হয়, তাহলে অপরাধীসহ যে কেউ ইচ্ছে করলে জিএসএম প্রযুক্তির যেকোনো মোবাইল ফোনে অন্যের ফোনালাপে আড়ি পাততে পারবে। নল বার্লিনে এক সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা দেখিয়েছি যে জিএসএমের নিরাপত্তাব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। আমরা সবাইকে এই আশু বিপদ সম্পর্কে জানাতে চেষ্টা করছি। আমরা আশা করছি, গ্রাহকদের কাছ থেকে আরও ভালো কোনো এনক্রিপশনের জন্য জোরালো দাবি ও চাপ আসবে।
এ৫/১ সংকেত ভাঙার ব্যাপারে নিরাপত্তাব্যবস্থাটির প্রবর্তক ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা জিএসএম অ্যাসোসিয়েশনের একজন মুখপাত্র জানান, ‘কোড ভাঙার বিষয়টি মারাত্মক অপরাধের শামিল। ব্যাপারটি আমরা হালকাভাবে নেব না।’ এর জবাবে কারস্টেন নল বিবিসিকে জানান, প্রতিবেদনটি প্রকাশের আগে তিনি আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে নিয়েছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, বিষয়টি যথেষ্ট বৈধ। গেম খেলার একটি কম্পিউটার আর তিন হাজার ডলার খরচ করলে যেকোনো ফোনে আড়ি পাতা সম্ভব এখন।’ এ৫/১ কোডটি ২২ বছর আগে প্রবর্তন করা হয়েছিল। এই সংকেতটি মূলত মোবাইল ফোন ও বেইজ স্টেশনগুলোর বেতার কম্পাঙ্ক (রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি) ৮০টির বেশি চ্যানেলের মধ্যে বারবার পরিবর্তন করার মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদানের নিরাপত্তা দেওয়ার কাজ করে। ১৯৯৪ সালে প্রথমবারের মতো সংকেতটির ব্যাপারে নিরাপত্তা দুর্বলতার অভিযোগ ওঠে। তবে মোবাইল এনক্রিপশনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নলের এই ‘ক্র্যাক’ করার বিষয়টি মানতে নারাজ। তাদের মতে, এই সংকেত ভাঙা হয়তো সম্ভব, তবে এ জন্য শত কোটি টাকার সরঞ্জাম লাগবে। আর এমন আয়োজন কোনো সরকার বা বিরাট বড় সংগঠিত অপরাধ বাহিনীর দ্বারা সম্ভব হতে পারে। নিরাপত্তা ভাঙার এই বিষয়টি ‘অবাস্তব’ বলে আখ্যায়িত করেন তিনি। —বিবিসি অবলম্বনে জাবেদ সুলতান

Custom Search
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment